পরীক্ষায় বসা নিয়ে অনেক ছাত্রছাত্রীদের মনেই বিরুপ মনোভাব আছে। কেন পরীক্ষা দেওয়ার দরকার সেটা নিয়েও ছাত্রছাত্রীদের প্রতিক্রিয়া কম নয়। পাশাপাশি অনেক ছাত্রছাত্রীরাই টুকলি করে কপি পেস্ট করেও পরীক্ষা দিতে যান। তবে আর তার দরকার নেই কেননা এবার থেকে বই খুলেই পরীক্ষা হলে বসে পরীক্ষা দিতে পারবেন ছাত্রছাত্রীরা। আর সম্প্রতি এরকমই একটি আপডেট জানালো পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষা পর্ষদ।
“ওপেন বুক এক্সাম” বই নিয়েই দেওয়া যাবে পরীক্ষ!
পরীক্ষা সম্পর্কে আরও বলতে গেলে প্রথমেই ফলে রাখা দরকার পরীক্ষা কেন নেওয়া হয়? পরীক্ষা হল একজন ছাত্র বা ছাত্রীর পড়াশুনার সামগ্রিক মূল্যায়ন। পরীক্ষার্থীর স্মৃতিশক্তি, মনোযোগ, কতটা পড়াশুনা চর্চায় আছে ইত্যাদি মূল্যায়নের জন্য পরীক্ষা নেওয়া হয়। তবে বর্তমান যুগে সময়ের সঙ্গে পরিবর্তন হচ্ছে শিক্ষাব্যবস্থার ধরন, পাল্টাচ্ছে সিলেবাস, পাল্টাচ্ছে শিক্ষা পদ্ধতি।
সবেতেই যদি আধুনিকতার ছোঁয়া লাগে তবে পরীক্ষাতে কেন নয়? বলতে গেলে পরীক্ষা নেওয়ার প্যাটার্নও আগের থেকে অনেকটাই পরিবর্তন হয়েছে। তবে এই পরিবর্তন ক্রমাগত চলতে চলতে যদি এমন পর্যায়ে দাড়ায় যে বই খুলেই পরীক্ষা হলে বসে পরীক্ষা দিতে পারবেন ছাত্রছাত্রীরা! কী অবাক হচ্ছেন তো! তাও কী সম্ভব? তবে এর থেকেও আশ্চর্য বিষয়টি হল বোর্ডের তরফ থেকে এই নয়া নিয়ম চালু হতে চলেছে।
সরকারের নতুন প্রকল্প » Students Internship Scheme: নতুন প্রকল্পে মাসে ১০০০০ টাকা পাবে ছাত্র-ছাত্রীরা! কবে থেকে আবেদন জেনে নিন
আদেও কতটা যুক্তি রয়েছে নতুন নিয়মে? সুবিধা কি হবে?
তবে এই নিয়ম এখনও বাস্তবায়িত হয়নি। সম্পূর্ণ বিষয়টিই ট্রায়াল এন্ড এরর এর উপর ভিত্তি করে আছে। চলতি বছরের নভেম্বর ডিসেম্বর মাস থেকেই CBSE বোর্ডের তরফ থেকে ফাইনাল পরীক্ষা এই নয়া ধাঁচে নেওয়া হবে। তবে অনেকেরই প্রশ্ন, বই খুলে পরীক্ষা নিলে কী আদৌ পরীক্ষা নেওয়ার লক্ষ্য কার্যকর হবে? এপ্রসঙ্গে বলে রাখা ভালো কোন নয়া নিয়ম উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে বিশিষ্ট চিন্তাভাবনা করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এক্ষেত্রে অবশ্য পরীক্ষার্থীর স্মৃতিশক্তির যাচাই করা সম্ভব হবে না তবে পরীক্ষার্থীর সৃজনশীলতা, বর্ননা করার দক্ষতা এবং দৃষ্টিভঙ্গির আচ পাওয়া যাবে।
তবে বই খুলেই যদি পরীক্ষা নেওয়া হয় সেক্ষেত্রে কিছু বিশেষত্ব থাকবে –
- বিজ্ঞান বিষয়গুলি: বিশেষত অঙ্ক ও বিজ্ঞানের বিষয়গুলিতে বই খুলে পরীক্ষা নেওয়ার উপর বিশেষ জোর দেওয়া হচ্ছে। কেননা যদি বই খুলে পরীক্ষা দিতেই হয় সেক্ষেত্রে প্রশ্নের ধরন থাকবে বিশ্লেষনমূলক অর্থাৎ কোন বিষয়কে দক্ষ ভাবে বর্ননা করার ক্ষমতা।
সেক্ষেত্রে পরীক্ষার্থীর সিলেবাসের বই সামনে খোলা থাকলেও মেধা কাজে লাগিয়ে যথাযথ ভাবে প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। তবে এই নিয়মটি কতটা কার্যকর হবে তা নিয়ে সন্দিহান আছে। চলতি বছরে শেষের দিকে CBSE বোর্ডের অধীনে হাতে গোনা কয়েকটি স্কুলে নবম, দশম, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীতে এই নিয়মের ভিত্তিতে পরীক্ষা নেওয়া হবে। তবে পরীক্ষায় ধার্য নম্বর থাকবে ছাত্রছাত্রীর বর্ননামূলক প্রশ্নের উত্তরের ভিত্তিতে।
অবশ্যই দেখুন » Madhyamik Pass Scholarship 2024: মাধ্যমিক পরীক্ষার পরেই স্কলারশিপ টাকা? এইগুলো অবশ্যই দেখে রাখো!
নয়া নিয়মে পরীক্ষার উল্লেখযোগ্য দিক
এই নয়া নিয়মের একটি উল্লেখযোগ্য গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে এই নিয়ম যদি সফলভাবে চালু করা হয় সেক্ষেত্রে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে টুকলির প্রবনতা কমবে। মূলত কড়া শাসন থাকা সত্বেও পরীক্ষা হলে দক্ষতার সঙ্গে টুকলি করে এরকম ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা নেহাত কম নয়। সেক্ষেত্রে বই খুলে পরীক্ষা দেওয়া হলে দীর্ঘদিনের টুকলির প্রবনতা একনিমেষেই শেষ হয়ে যাবে পাশাপাশি ছাত্রছাত্রীর বিশ্লেষনের ভিত্তিতে নম্বর বিভাজন করা হবে।
আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ ও টেলিগ্রাম গ্রুপে যুক্ত হোন -
আরও আপডেট »