📖 আজকের ক্লাসে: আশাপূর্ণা দেবীর ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পের সারাংশ ও গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর 🔍
প্রিয় ছাত্রছাত্রীরা,
আজকের ক্লাসে আমরা আলোচনা করতে চলেছি আশাপূর্ণা দেবী রচিত ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পটি নিয়ে, যা তোমাদের দশম শ্রেণির পাঠ্যক্রমের অন্তর্ভুক্ত। এই গল্পের মাধ্যমে আমরা জানতে পারব এক কিশোরের সাহিত্য জগতে প্রবেশের অভিজ্ঞতা, আত্মসম্মানবোধ ও বাস্তব উপলব্ধির কাহিনি।
এই পোস্টে তোমরা গল্পের সারসংক্ষেপ, নামকরণের বিশ্লেষণ ও গুরুত্বপূর্ণ সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর পেয়ে যাবে, যা পরীক্ষার প্রস্তুতিতে সাহায্য করবে। 💡✨
🔽 চলো, শুরু করা যাক! ⬇️
জ্ঞানচক্ষু – আশাপূর্ণা দেবী (দশম শ্রেণির পাঠ্য – প্রথম অধ্যায়)
উৎস ও পটভূমি
‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পটি বিশিষ্ট বাঙালি সাহিত্যিক আশাপূর্ণা দেবী রচিত ‘কুমকুম’ গল্পসংকলন থেকে নেওয়া হয়েছে। আশাপূর্ণা দেবী বাংলা সাহিত্যের একজন অন্যতম প্রধান লেখিকা, যিনি নারীজীবন, সামাজিক বাস্তবতা এবং শিশুদের মানসিক বিকাশের নানা দিক তুলে ধরেছেন তাঁর লেখায়। ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পে শিশুমনের কৌতূহল, সাহিত্য সম্পর্কে উপলব্ধি এবং আত্মমর্যাদার বোধ স্পষ্টভাবে প্রকাশিত হয়েছে।
জ্ঞানচক্ষু: গল্পের সারাংশ
‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র তপন, যে ছোটো থেকেই মনে করত লেখকরা যেন এক বিশেষ জগতের মানুষ, সাধারণদের মতো তারা চলাফেরা করেন না। কিন্তু তার এই ভুল ধারণা ভেঙে যায় যখন সে জানতে পারে তার সদ্যবিবাহিতা ছোটোমাসির স্বামী একজন লেখক।
তপন অবাক হয় দেখে, লেখক হওয়া সত্ত্বেও ছোটোমেসো সাধারণ মানুষের মতো জীবনযাপন করেন—ঘুমান, স্নান করেন, এমনকি দাড়ি কামান। মামাবাড়িতে আসার পর তপনও লেখালেখি শুরু করে এবং একটি গল্প লিখে ফেলে। ছোটোমাসি তার লেখা জোর করে ছোটোমেসোর হাতে তুলে দেয়, এবং তিনি গল্পটি সন্ধ্যাতারা পত্রিকায় ছাপানোর প্রতিশ্রুতি দেন।
তপন উচ্ছ্বসিত হয়ে অপেক্ষা করতে থাকে, কিন্তু গল্পটি প্রকাশ হতে দেরি হয়। হঠাৎ একদিন ছোটোমাসি ও মেসো পত্রিকা হাতে বাড়িতে আসে, যেখানে দেখা যায় গল্পটি প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু গল্পটি পড়ে তপন হতাশ হয়, কারণ সে বুঝতে পারে ছোটোমেসো সংশোধনের নামে পুরো গল্পই পাল্টে দিয়েছেন। নিজের লেখা গল্পকে অপরিচিত মনে হওয়ায় সে দুঃখ পায় এবং সংকল্প করে যে ভবিষ্যতে নিজেই তার লেখা পত্রিকায় জমা দেবে, যাতে তার নিজের কৃতিত্ব অন্য কেউ গ্রহণ করতে না পারে। এই উপলব্ধির মাধ্যমেই তপনের “জ্ঞানচক্ষুর” উন্মেষ ঘটে।
নামকরণের তাৎপর্য
গল্পের নাম “জ্ঞানচক্ষু” (অন্তর্দৃষ্টি) খুবই তাৎপর্যময়। শুরুতে তপন মনে করত লেখকরা সাধারণ মানুষের চেয়ে আলাদা। পরবর্তীতে সে বুঝতে পারে লেখকরা সাধারণ মানুষের মতোই। কিন্তু আসল শিক্ষা সে পায় যখন তার নিজের গল্প প্রকাশিত হলেও নিজের লেখা বলে মনে হয় না। তখনই সে লেখক হিসেবে নিজের অধিকার ও আত্মমর্যাদার গুরুত্ব বুঝতে পারে, যা তার জ্ঞানচক্ষুর উন্মোচন ঘটায়। তাই গল্পের নামকরণ যথাযথ এবং ব্যঞ্জনাধর্মী।
জ্ঞানচক্ষু (Gyanchakshu Ashapurna Devi) অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (MCQ & VSAQ)
১. ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পটি কোন গল্পসংকলন থেকে নেওয়া হয়েছে?
উত্তর: ‘কুমকুম’ গল্পসংকলন থেকে।
২. তপন লেখকদের সম্পর্কে কী ধারণা পোষণ করত?
উত্তর: তপন মনে করত লেখকরা সাধারণ মানুষের মতো নন, তারা ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকা এক বিশেষ জগতের (অন্য গ্রহের প্রাণী) মানুষ।
৩. তপনের ছোটমেসো কী কাজ করতেন?
উত্তর: তিনি একজন অধ্যাপক ও লেখক ছিলেন।
৪. তপন কখন গল্প লিখতে শুরু করে?
উত্তর: মামাবাড়িতে ছোটোমাসির বিয়ের সময় সে প্রথম গল্প লিখে।
৫. কোন পত্রিকায় তপনের গল্প প্রকাশিত হয়?
উত্তর: সন্ধ্যাতারা পত্রিকায়।
৬. তপন নিজের গল্প পড়ে হতাশ কেন হয়?
উত্তর: কারণ তার ছোটোমেসো সংশোধনের নামে পুরো গল্পটিই পরিবর্তন করে দিয়েছিলেন, যা তপনের নিজের লেখা বলে মনে হয়নি।
৭. গল্পের শেষের দিকে তপন কী সংকল্প করল?
উত্তর: ভবিষ্যতে সে নিজেই তার লেখা পত্রিকায় জমা দেবে, যাতে অন্য কেউ তার লেখা বদলে দিতে না পারে।
৮. ‘জ্ঞানচক্ষু’ নামকরণের কারণ কী?
উত্তর: তপনের সাহিত্যিক জীবন ও আত্মমর্যাদার প্রতি তার উপলব্ধিই তার “জ্ঞানচক্ষু” খুলে দেয়, তাই গল্পের নাম যথার্থ।
এই নোটস শিক্ষার্থীদের জন্য সহজ ও তথ্যবহুল করে তৈরি করা হয়েছে, যা তাদের বোঝার সুবিধা দেবে। আজকের ক্লাসের ছোট করে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য বিষয়বস্তু এবং সারাংশ শেয়ার করা হলো। অন্য আরেকটি পোস্টে বিস্তারিত প্রশ্ন উত্তর বড় প্রশ্ন সহ আলোচনা করা হবে।
আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ ও টেলিগ্রাম Study গ্রুপে যুক্ত হোন -