মাধ্যমিক হোক উচ্চমাধ্যমিক কিংবা স্কুলের ফাইনাল পরীক্ষা। সব ক্ষেত্রেই বিজ্ঞান ক্যাটাগরি থেকে যে রচনাটা সবথেকে বেশি কমন এবং গুরুত্বপূর্ণ জনপ্রিয় সেটি হল “দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান“। এই একটি মাত্র রচনা ভালোভাবে করে গেলে বিজ্ঞান ক্যাটাগরি থেকে অন্য যেকোন রচনা খুব অনায়াসেই লিখে ফেলা যায়।
তাই তোমাদের সুবিধার জন্য দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান, বিজ্ঞানের জয়যাত্রা, মানব জীবনে বিজ্ঞান, মানব কল্যাণে বিজ্ঞান এই সমস্ত রচনারই স্যাম্পেল কপি নিয়ে তোমাদের জন্য দেওয়া রইল। তোমরা অবশ্যই নিজেদের ভাষায় লেখার চেষ্টা করবে তবেই ভালো রকম ফল করতে পারবে।
দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান এবং বিজ্ঞানের জয়যাত্রা
"যদি বেঁচে যাও এবারের মতো, যদি কেটে যায় মৃত্যুর ভয়
জেনো বিজ্ঞান লড়েছিলো একা, মন্দির মসজিদ নয়।"
ভূমিকা :–
– এটা একটা ছড়া হলেও এটা বাস্তবে সত্যি। কারণ বিজ্ঞান একা লড়েছিল বলে আজ বিজ্ঞানের এত অগ্রগতি। কোনো মনীষী বলেছিলেন, উনিশ শতকটা ছিল দার্শনিকদের যুগ এবং সভা সমিতির যুগ। তারপরে বিশ শতক এলো বিজ্ঞানীদের যুগ আর বর্তমানের যুগ অর্থাৎ একবিংশ শতাব্দীর হল “বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির যুগল অন্বেষণের যুগ”। আধুনিক সভ্যতায় বিজ্ঞান এক অপরিহার্য বিষয়। ব্যবহারিক থেকে শুরু করে দৈনন্দিন জীবনে এক-পা চলতে গেলে বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তির সাহায্য ছাড়া চলতে পারি না। এক কোথায় বলতে গেলে বিজ্ঞান ছাড়া আমাদের জীবন অচল।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সম্পর্ক :–
নিত্য নতুন সমস্ত সত্যের সন্ধানে বিজ্ঞান লেগে রয়েছে এবং সমস্ত সত্যকে কাজে লাগিয়ে নতুন নতুন ব্যবহারিক জিনিস আবিষ্কার করে চলেছে। তার মধ্যে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ একটি আবিষ্কার হল ‘বিদ্যুৎ’, যা এখন আমাদের দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞানের প্রযুক্তিগত অপরিহার্য ফসল।
আমাদের দৈনন্দিন জীবনের প্রতিটি মুহূর্তের সঙ্গেই জড়িয়ে রয়েছে বিজ্ঞান। সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর থেকে রাতে ঘুমাতে যাওয়া পর্যন্ত আমারা যা কিছু ব্যবহার করি, সে সবই বিজ্ঞানের দান। এমনকি রাতে ঘুমানোর সময়ও আমরা বিজ্ঞানের প্রযুক্তিগত বিভিন্ন আবিষ্কারের সাথে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে নির্ভর করে থাকি।
প্রাত্যহিক জীবনে বিজ্ঞানের অবদান :–
আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহৃত প্রায় প্রতিটি জিনিস বিজ্ঞানের দান। দিনের প্রথম পর্বে ঘড়ি আমাদের জানিয়ে দেয় সময়ের সংকেত, রান্নার জন্য ব্যবহৃত হয় প্রেসার কুকার, গ্যাস, মাইক্রোওভেন, ইন্ডাকশন কুকার, মিক্সার, জুসার প্রভৃতি। শীতকালে স্নানের সময় পেয়ে যাই ওয়াটার হিটার। এইসব যন্ত্রপাতি আধুনিক জীবনকে সহজতর করে তুলেছে।
চিকিৎসাক্ষেত্রে বিজ্ঞান :–
"আরো আরো সামগ্রী ভোগ যাতে করে যেতে পারি,
গড় আয়ু বাড়িয়ে দাও বিজ্ঞান খুব তাড়াতাড়ি।"
চিকিৎসাক্ষেত্রেও বিজ্ঞান কৃতিত্বের ছাপ রয়েছে। আগে মানুষ যেসব ভয়ংকর মহামারীতে মারা গেছে বিজ্ঞান এসে সেই সমস্ত মহামারীর ঔষধ আবিষ্কার করেছে। ফলে মানুষের গড় আয়ু অনেক বেড়ে গেছে। এখন ক্যানসারের মতো মারণ রোগেরও চিকিৎসা সম্ভব। তাছাড়া, বিভিন্ন ধরণের রোগ নির্ণয়কারি যন্ত্রপাতি আবিষ্কারের ফলে রোগ নির্ণয় করা সহজ হয়েছে এবং শল্যচিকিৎসা সহজ করার ক্ষেত্রেও বিজ্ঞানের প্রযুক্তির প্রভাবে অনেক উন্নতি ঘটেছে।
কৃষি ও শিল্প ক্ষেত্রে বিজ্ঞান :–
আগেকার দিনে যখন অনাবৃষ্টির কারণে খরা হত সেই বছরে কোন ফসল হতো না। কিন্তু এখন বিজ্ঞানের আবিষ্কারের ফলে ভৌমজল উত্তোলনের মাধ্যমে কৃষি কাজ করা সম্ভব হয়েছে। এছাড়াও উচ্চফলনশীল বীজ, রাসায়নিক সার, কীটনাশক এবং অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি আবিষ্কার হওয়ার ফলে কৃষিক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন এসেছে। আবার, শিল্প কারখানায় উন্নতমানের যন্ত্রপাতি ব্যবহারের ফলে কম শ্রমিকে, কম সময়ে এবং কম খরচে বেশি পণ্য উৎপাদিত হচ্ছে।
শিক্ষাক্ষেত্রে বিজ্ঞান :–
আমরা বিদ্যাসাগরের জীবনের কিছু কিছু কাহিনী পড়তে গিয়ে জানতে পেরেছি যে, তিনি রাস্তার ধরে ল্যাম্পপোস্টে থাকা হারিকেনের আলোতে পড়াশোনা করেছেন। এখন বিজ্ঞানের অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে প্রতিটি বাড়িতে বিদ্যুৎ সহজলভ্য হয়ে ওঠেছে।
প্রথাগতভাবে শিক্ষাব্যবস্থাতেও অনেক পরিবর্তন এসেছে। পাঠদানের ক্ষেত্রে বড়ো কম্পিউটার ব্যবহার করে সাধারণ ক্লাসরুমকে স্মার্ট ক্লাসরুম করা হচ্ছে। এখন পাঠ্যপুস্তকের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে বিভিন্ন ডিজিটাল স্টাডি মেটেরিয়াল। ইন্টারনেট ব্যবস্থার উন্নতির ফলে এখন ছাত্রছাত্রীরা ঘরে বসে অনলাইন কোচিং নিতে পারছে।
যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি :–
"সময় যাচ্ছে চলে, কাজ করো চটপট
বিজ্ঞান করেছে শত দূরকে করেছে নিকট।"
প্রাচীনকালে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যেতে গেলে ধনী ব্যক্তিরা ব্যবহার করত ঘোড়ার গাড়ি বা গোরুর গাড়ি এবং দরিদ্র মানুষেরা হেঁটেই দূরত্ব অতিক্রম করত। এখন বিজ্ঞানের উন্নতির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থাতেও চরম উন্নতি সাধিত হয়েছে। বিজ্ঞানের আশীর্বাদে মানুষ এখন অসীমদুরকেও নিকট করে ফেলেছে। পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তে পৌঁছাতে হলে মানুষের কাছে দূরত্বটা আর কোনো বাধা নয়।
জল, স্থল এবং বায়ুপথে মানুষ এখন পৃথিবী পরিক্রমা করতে পারে। তাছাড়া, মানুষের তৈরি রকেট এখন গ্রহ থেকে গ্রহান্তরে পাড়ি দিচ্ছে। মনুষ্য এবং পণ্য পরিবহনের পাশাপাশি তথ্য আদানপ্রদানের ক্ষেত্রেও বিজ্ঞান আজ সাফল্যের চরম শিখরে পৌঁছে গেছে। চিঠি, টেলিগ্রাম, টেলিফোনের যুগ পেরিয়ে আমরা এখন মোবাইল জামানায় এসে পৌঁছেছি। হাতের তালুতে থাকা স্মার্টফোন ব্যক্তিমানুষকে বিশ্বের সঙ্গে যুক্ত করেছে।
বিনোদন ক্ষেত্রে বিজ্ঞান :–
আগে মানুষ বিনোদন উপভোগ করার জন্য যাত্রাপালা, থিয়েটার এবং সংগীতচর্চা করত। এই বিনোদনের জগতে বিজ্ঞানের প্রথম অবদান ছিল চলচ্চিত্র বা সিনেমা। পর্দায় মানুষের নড়াচড়া দেখে সেদিন মানুষ মুগ্ধ হয়েছিল। এরপর মানুষের বিনোদনের তালিকায় যুক্ত হয়েছিল রেডিও এবং টেলিভিশন।
সিনেমা, রেডিও এবং টিভি বিনোদনের এই তিন মাধ্যম নিয়ে মানুষের আশ্চর্য সীমা ছিল না। সেদিন কেউ ভাবতে পারেনি যে একদিন মানুষ তার পকেটে সমগ্র জগতের বিনোদন-ভান্ডার নিয়ে ঘুরে বেড়াবে। স্মার্টফোন আবিষ্কার হওয়ার ফলে এমনটাই ঘটেছে। বর্তমানে বিনোদন হল সম্পূর্ণ মোবাইল-কেন্দ্রিক। এই কারনেই স্টিফেন হকিং বলেছেন– “বিজ্ঞান শুধু যুক্তির শিষ্যই নয়, রোমান্স ও আবেগেরও একটি।”
উপসংহার :–
একথাও সঠিক যে, বিজ্ঞান আমাদের দৈনন্দিন জীবন আরামদায়ক করে তুলেছে। কিন্তু সমস্যাটা হল আরামের জীবনযাত্রায় অভ্যস্ত হয়ে আমরাও যন্ত্রনির্ভর হয়ে যাচ্ছি। এই জন্য আমি বলি–
"বিজ্ঞান, তুমি দিয়েছ বেগ, কিন্তু কেড়েছো আবেগ।"
যে মানুষ যন্ত্র তৈরি করেছে সেই মানুষ যদি যন্ত্রের দাস হয়ে যায় তাহলে দুশ্চিন্তার অবকাশ থেকেই যায়। তাছাড়া, পরিবেশের কথাটাও মাথায় রাখতে হবে। আমাদের নিজেদের সুবিধার্থে অনেক সময় পরিবেশের ক্ষতি করে ফেলি। যেমন, এসি বা ফ্রিজ ব্যবহার করলে সেগুলি থেকে ক্লোরো-ফ্লুরো কার্বন গ্যাস নির্গত হয় যা পরিবেশের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকর। তাই মানবসভ্যতার স্বার্থে পরিবেশবান্ধব উপায়ে বিজ্ঞানের ব্যবহার করাই কাম্য।
মানব জীবনে বিজ্ঞানের অবদান | প্রতিদিনের জীবনে বিজ্ঞান
❝ আমরা ছিলাম আদিম মানুষ জঙ্গলেতে বাস,
খাদ্য ছিল কাঁচা মাংস বনের লতা ঘাস।
পশুর সাথে নিত্য নতুন হাজার লড়াই করে,
কোনো মতে বেঁচে থাকা বন পাহাড়ের ঘরে।
বিজ্ঞান এসে পালটে দিল চলচিত্র সব,
জীবন পেল নতুন মাত্রা নতুন অনুভব। ❞
ভূমিকা :—
বস্তুতই মানুষের জীবন ছিল অরণ্যাচারী, ছিল না নূনতম আশ্রয়, ছিল না বেঁচে থাকার উপযোগী খাবার। জীবনের সব স্বপ্ন হারিয়ে যেত অন্ধকার গুহার মধ্যে। কোনো মতে বেঁচে থাকতে হতো পশুর সাথে লড়াই করে। অবর্ণীয় এই যন্ত্রনা থেকে মানুষ মুক্তির উপায় খুঁজেছে। আপন বুদ্ধিকে সম্বল করে মানুষ আরণ্যক জীবন থেকে বেরিয়ে এসেছে। মানুষের বুদ্ধির কাছে পরাজিত হয়েছে বিপুল শক্তিধর আরন্যক পশু। মানব সভ্যতার এই বুদ্ধি মনক্স যাত্রাই বিজ্ঞানই হলো কালোত্তীর্ণ সঙ্গী। মানব সভ্যতার এই উত্থান ও বিকাশ মূলেই হলো বিজ্ঞানের দান, বিজ্ঞান ছাড়া মানব সভ্যতা শক্তিহীন, মেরুদন্ডহীন এবং সম্ভবনাহীন।
বিজ্ঞান কী? ~
যে জ্ঞান বিশেষভাবে লাভ করা যায়, তাকে বিজ্ঞান বলে। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ বিজ্ঞান, মানুষের জন্ম ও মৃত্যুতে বিজ্ঞান, মানুষের নিশ্বাস-প্রশ্বাসে বিজ্ঞান।
বিজ্ঞানের অভিযাত্রা :—
একথা অবধারিত যে, আগুনের আবিষ্কার বিজ্ঞানের প্রথম আর্শীবাদ। অগ্নি সম্পদে সমৃদ্ধ হয়ে মানুষ কৃষি ব্যবস্থার করচনা পায়। কৃষি ব্যবস্থার অনুগামী হল সঞ্চয়ের ইচ্ছে। বিভিন্ন গোষ্ঠীবদ্ধ মানুষ বাস্তুতান্ত্রিক স্বার্থ বুদ্ধিতে উজ্জিবিত হয়, এর ফলশ্রুতি ইউরোপে অধুনিক বিজ্ঞানের প্রভাব পড়েছিল অষ্টাদশ শতকে। বিজ্ঞান গ্রহন করেছিল শিল্পবিপ্লবের স্তুপতির ভুমিকা। বাকশক্তিকে কাজে লাগিয়ে গড়ে উঠেছিল কলকারখানা, সমুদ্রের বুকে চিরে জাহাজ চলাচল করেছিল দূর-দূরান্তে। এভাবে বানিজ্যের প্রসার ঘটেছিল।
প্রাত্যহিক জীবনের বিজ্ঞান :–
এই ভুবনবিজয়ী মুহূর্তকে সাক্ষী রেখে আমরা একবিংশ শতাব্দীর বরণডালা হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি। তখন বিজ্ঞানই আমাদের একমাত্র নিয়ন্ত্রা। আমাদের প্রতিদিনের জীবন শুরু হয় বিজ্ঞানের মহিমায়। ইলেক্ট্রনিক ঘড়ির এলার্মে আমাদের ঘুম ভাঙে, ইলেকট্রিক রেজারে দাড়ি কোটে মানুষ চা খায়, বৈদ্যুতিক চুল্লিতে খাবার তৈরি হয়। যে খবরের কাগজটি আমাদের চোখের সামনে গোটা দুনিয়ার চিত্র হাজির করে সেটি ছাপা হয়ে আসে অফসেট ওয়েব মেশিনে। এককথায় আজকের মানুষ বিজ্ঞান ছাড়া একমুহূর্ত চলতে পারে না।
কৃষি ও শিল্পক্ষেত্রে বিজ্ঞান :–
মানব সভ্যতার দ্রুত বিকাশের ক্ষেত্রে কৃষি বিপ্লব ও শিল্প বিপ্লবের অবদান অনস্বীকার্য। এমন একদিন ছিল যখন माনুষ লাঙল টানত, এখন জমি চাষ থেকে ফসল বপন ও রোপন, আগাছা উৎপাটন, ফসল ঝাড়াই-মাড়াই সংরক্ষন সব কাছেই বৈজ্ঞানিক যন্ত্র ব্যবহৃত হয়। এর ফলে উৎপাদন বেড়েছে অনেক গুন, শ্রম লাঘব হয়েছে মানুষের সর্বপরি জনবিস্ফোরনকে মোকাবিলা করে মানুষ সন্ধান করেছে আরও সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের। একইভাবে শিল্প ক্ষেত্রেও বিজ্ঞানের সুফল মানুষকে দ্রুতগামী করেছে, উৎপাদনশীল করেছ।
যোগাযোগ ব্যবস্থায় বিজ্ঞান :–
অজানাকে জানতে, অচেনাকে চিনতে বিজ্ঞানই হয়েছে মানুষের সহায়তা। কবিগুরুর ভাষায়–
❝কত অজানারে জ্বালাইলে তুমি
কত ঘরে দিলে ঠাঁই
দূরকে করিলে নিকট
পরকে করিলে ভাই❞
বিজ্ঞানের আশীর্বাদে আজ সারা বিশ্বে আমাদের ঘরের কোণে ঠাঁই পেয়েছে। উপগ্রহ যোগাযোগ ব্যবস্থা নিমেষে যেকোনো প্রান্তের ঘটনা প্রবাহ নিয়ে আসে নাগালে দ্রুতগামী আকাশঘন রকেট আর বিমানে চেপে আমরা রাতারাতি সারা পৃথিবী ঘুরে আসতে সক্ষম।
চিকিৎসা শাস্ত্রের বিজ্ঞান :—
আধুনিক বিজ্ঞান তার আর্শীবাদকে সবচেয়ে বেশি বর্ধিত করেছে, চিকিৎসা ক্ষেত্রে। বিজ্ঞানের নিরন্তর সাধনায় আজ বহুবিধ দুরারোগ্য ব্যাধি মানুষের নিয়ন্ত্রনে। একদিন রোগে শোকে মানুষ ছিল নিম্নতির ক্রীড়ানক। তখন মানুষই তার কল্যানী প্রচেষ্টায় নিয়তিকে তালবন্দি করেছে। লুই পাস্তুর জলাতঙ্কের প্রতিশোধক আবিস্কার করে যে সম্ভবনার দ্বারা উন্মোচন করে দিয়েছেন। সেই পথ ধরে মানুষ আবিষ্কার করেছে অসংখ্য রকম ভ্যাকসিন। এখন আর ঘাতক ব্যাধি বলে কিছু নেই। এখন এক কথায় বিজ্ঞানই যেন দায়িত্ব নিয়েছে মানুষকে মৃত্যুঞ্জয়ী করার।
বিজ্ঞানের ভালোমন্দ :—
একথা সত্যি যে বিজ্ঞান হয়ে উঠেছে আমাদের অগ্রগতির স্মারক। সেই বিজ্ঞান আবার মানব সভ্যতাকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে পারে নিমেষে। তাই বিজ্ঞানের অবিসংবাদী অগ্রগতিকে সমাজতাত্বিকরা সহজভাবে মেনে নেননি। তাদের মতে, বিজ্ঞান দিয়েছে বেগ, আবার কেড়ে নিয়েছে আবেগ। বিজ্ঞানের যান্ত্রিকতায় মানুষও যন্ত্রে পরিনত হচ্ছে। সহজাত প্রেম-ভালোবাসা, দয়া-দাক্ষিণ্য, সুকুমার বৃত্তি হারিয়ে তারা পরিনত হচ্ছে জড় পদার্থে।
উপসংহার :–
বলাবাহুল্য বিজ্ঞান অভিশাপ না আশীর্বাদ এই তর্ক চলবে অনন্তকাল। তার সত্ত্বেও মানুষ ক্রমান্বয়ে অধিকতর বিজ্ঞানমুখী হচ্ছে। বিজ্ঞানই কুসংস্কারের নাগপাশ থেকে মানুষকে মুক্তি দিচ্ছে। আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে, আমরা যেন বিজ্ঞানকে নিয়ন্ত্রন করতে পারি। নিজেকে বিজ্ঞানের ক্রীত দাসে পরিণত না হই। কবির সাথে কণ্ঠ মিলিয়ে বলতে হবে—
❝বিজ্ঞানের টোপর পরে আমরা হব শক্তিমান,
অশুভকে পায়ে ঠেলে শুভকেই করি প্রনাম।❞
আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ ও টেলিগ্রাম Study গ্রুপে যুক্ত হোন -