মাধ্যমিকের ক্ষেত্রে বাংলা বিষয়ের কোনি গল্পটি সহায়ক হিসেবে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ! পরীক্ষার ক্ষেত্রে দুটি বড় প্রশ্ন এখান থেকে ছাত্রছাত্রীদের করতে হয় এবং 10 নম্বর ছাত্রছাত্রীরা পেয়ে যাবে।
সম্পূর্ণ সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের উত্তর অভিজ্ঞ শিক্ষকের পরামর্শে করা হয়েছে, তাই সেক্ষেত্রে আমাদের কপিরাইটের আওতায় (Copyright © EduTips Bangla) এবং কোনো অংশ পুনঃপ্রকাশ বা পুনঃব্যবহার করা যাবে না। সকল অধিকার সংরক্ষিত।
মাধ্যমিক বাংলা কোনি – মতি নন্দী | বড় প্রশ্ন উত্তর Madhyamik Class 10 Koni Question Answer
বারুনী কী? ঐ দিনে গঙ্গার ঘাটের দৃশ্যটি বর্ণনা করো।
☆ উত্তর → বাংলা সাহিত্য ও সাংবাদিকতার জগতের এক উজ্জ্বল ব্যক্তিত্ব মতি নন্দীর ‘কোনি’ উপন্যাসে বারুনী নামে এক পরবের উল্লেখ আছে।
বারুনী হল, শত ভিষা নক্ষত্রযুক্ত কৃষ্ণা চতুর্দ্দশী তিথিতে পুণ্য স্নানাদি দ্বারা পালনীয় এক বিশেষ পর্ব, ভক্তরা ঐ দিন গঙ্গাদেবীর উদ্দেশ্য, মনস্কামনা পুরনের জন্য, কাঁচা ফল প্রদান করে।
☆ হিন্দু শাস্ত্র অনুসারে বারুনী পরবের দিন ভক্তরা প্রচুর পরিমানে কাঁচা ফল (আম) প্রদান করে গঙ্গার বক্ষে। তাই গঙ্গার তীরবর্তী অঞ্চলের অতিসাধারন পরিবারের ছেলেরা উৎসাহ সহকারে এই আমগুলি কুড়োয় কিন্তু ভাটার সময় জল নেমে যাওয়ায় কাদামাখা পায়ে ঘোরা ফেরাতে বিরক্তি বোধ করছিল।
সাড়ে তিন মন ওজনের বিষ্ণুচরন বড় একটা ছেঁড়া মাদুরের উপর শুয়ে মালিশ-ওয়ালাকে দিয়ে মালিশ করাচ্ছিল। সাদা লুঙ্গি ও গেরুয়া পাঞ্জাবি পড়া চশমা পরিহিত ক্ষিতীশ সিংহ তানপুরা, তবলা, সা-রে-গা-মা ইত্যাদি ভঙ্গিতে মালিশ দেখে ব্যঙ্গ করেতে শুরু করেন। তিনি বলেন যে তিনিও নিয়মিত শরীরচর্চা করেন। বিষ্ণুচরন ধর রাগের বদলে কৌতুহল প্রকাশ করেন। তারপর দুজনের মধ্যে পাতলা হাসি, মনের ও শরীরের জোরের ইচ্ছা ইত্যাদির মধ্যে দিয়ে নিজেদের সম্পর্ক জমিয়ে তুলেছিলেন।
❝এই দ্বিতীয়বার সে ওকে দেখলে❞ – কাকে দ্বিতীয় বার দেখার কথা বলা হয়েছে? প্রথম ও দ্বিতীয় দেখা দুটি ঘটনা সাংক্ষেপে লেখ।
☆ উত্তর → বাংলা সাহিত্য ও সাংবাদিকতার জগতের এক উজ্জ্বল ব্যক্তিত্ব মতি নন্দীর ‘কোনি’ উপন্যাসের চতুর্থ পরিচ্ছেদে কোনিতে ক্ষিতীশ সিংহের দ্বিতীয়বার দেখার কথা আলোচ্য অংশে উদ্ধৃত করে হয়েছে।
☆ প্রথম পরিচ্ছেদে, বারুবীর দিন গঙ্গার ঘাটে ক্ষিতীশ সিংহ ‘কোনি’ নামে এক সাধারণ পরিবারের মেয়েকে দেখেন। এটি তাঁর কোনিকে প্রথম দেখা। গঙ্গায় ভাটার টানে ভেসে যাওয়া আমগুলিকে যে তিনজন সাঁতার কেটে কুড়াচ্ছিল তাদের মধ্যে একজনের নাম কোনি। একটি আমকে কুড়োনো নিয়ে তিনজনের মধ্যে মারপিট (ঝগড়া বা মারামারি) শুরু হয়। রোগা, কালো চেহারার মেয়েটিকে তার মুখটা কাদায় ঘষে দেওয়ার চেষ্টা করে। তারপর ঐ কালো মেয়েটি আঙুলে কামড়ে দিয়ে তার উপর ঝাঁপিয়ে আমটি সাংগ্রহ করে। এই মেয়েটি হল ক্ষিতীশবাবুর প্রথম দেখা কোনি।
☆ দ্বিতীয়বার, ক্ষিতীশ সিংহ কোনিকে দেখেছিল এক হাঁটা প্রতিযোগিতায়। নেতাজি বালক-সংঘের পরিচালনাম ২০ ঘন্টা অবিবাম হাঁটা প্রতিযোগিতায় মেয়েটিকে দেখে ক্ষিতীশ চিনতে পেরেছেন। এই দ্বিতীয়বার ক্ষিতীশ সিংহ কোনির সঙ্গে দেখা করে। এবং সাঁতার শেখার জন্য প্রস্তাব দেন।
❝শরীরের নাম মহাশয়, যাসহাবে তাই সয়❞ –ক্ষিতীশ সিংহের এই উক্তিতে কী মানসিকতা ফুটে উঠেছে?
☆ উত্তর → বাংলা সাহিত্যে এক উজ্জ্বল ব্যক্তিত্ব মতি নদীর ‘কোনি’ উপন্যাসের দ্বিতীয় পরিচ্ছেদে ক্ষিতিশ সিংহ এই প্রবাদ বাক্যটি ব্যবহার করেছেন। অত্যন্ত সচেতন ব্যক্তি ক্ষিতীশ মনে করেন যে বয়স পঞ্চাশ-পঞ্চান্ন হলেও প্রত্যেক মানুষের উচিত শরীর ও মন সম্পর্কে সচেতন হওয়া। তিনি প্রতিদিন শরীরচর্চা করেন। তিনি বলেছেন, ❝ক্ষিদের মুখে যা পায়, অমৃতের মতো লাগে❞।
তিনি এটাও বুঝেছিলেম যে বাঙালির রান্নায় স্বাথ্য ভালো থাকে না। তাই তিনি বেশির ভাগ সময় কুকারে সিদ্ধ করে খাবার খেতেন। প্রথম প্রথম মিতীশের স্ত্রী লীলাবতী এর বিরোধিতা করলেও রান্নায় বেশি পরিমানে মশলা ব্যবহার করেছিলেন। কিন্তু অপূর্ব সংযম ক্ষিতীশ সিংহের শরীর ও মনকে সংযমী করে তোলে। তিনি বুঝেছিলেন মনকে সংযম রাখলে শরীর নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
আলোচ্য অংশে অবশ্য ক্ষিতীশ সিংহ শরীর ও মনের জোরকে বোঝাতে গিয়ে সাঁতারুদের প্রতি সংযমী হতে বলেছেন। অর্থাৎ, সাঁতারুদের প্রতি দায়িত্ববোধ, কর্তব্যবোধ ও কঠোর পরিশ্রমের প্রতি মনকে সংযমী করার প্রসঙ্গেই আলোচ্য প্রবাদবাক্যটি ব্যবহার করেছেন।
❝সে দায়িত্ব আমার❞ –দায়িত্ব বলতে তিনি কী বুঝিয়েছেন? কোন দায়িত্ব?
☆ উত্তর → মতি নন্দীর ‘কোনি’ উপন্যাসের পঞ্চম পরিচ্ছেদে ক্ষিতীশ সিংহ কোনির দাদা কমল পালকে উক্ত কথাটি বলেছেন। এখানে দায়িত্ব বলতে বোঝানো হয়েছে যে ক্ষিতিশ সিংহ প্রতিদিন ট্রেনিংয়ের মাধ্যমে কোনিকে দক্ষ সাঁতারু করে তুলবেন। আর কোনির খাওয়া পরা তার মানসিক গড়ন তৈরি করা ইত্যাদির দায়িত্ব ক্ষিতিশ সিংহ নেবেন। এমনকি, কোনি গুরুগৃহে থেকে নিত্য অনুশীলন করবে। এই দায়িত্বের কথা এখানে বলা হয়েছে।
ক্ষিতিশ সিংহ সাঁতারের কোচ। অর্থাৎ দক্ষ সাঁতারু তৈরি করা তার জীবনের ব্রত। তাই গঙ্গার ঘাটে প্রথম দেখা কোনি নামের মেয়েটিকে রবীন্দ্র সরোবরে সাঁতার প্রতিযোগিতায় তিনি কোনিকে বেছে নিয়েছিলেন। এখানে তিনি কোনির দাদার কাছে কোনির সাঁতার শেখানোর প্রস্তাব দিলে কোনির দাদা তাঁদের অসহায় পরিবারের কথা বলেন। তিনি অকপটে বলেন ইচ্ছা থাকলেও সাঁতার শেখাবার সামর্থ্য নেই। একথা শুনে ক্ষিতীশ সিংহ গুরুর মতো শিষ্য কোনিকে আহার ও বাসস্থান দিয়ে উপযুক্ত সাঁতারু তৈরির দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন। এই দায়িত্বের মধ্যে ক্ষিতিশ সিংহের উন্নত মানসিকতার পরিচয় আমরা পেয়ে থাকি।
❝বুকের মধ্যে পুষে রাখুক❞ –ক্ষিতদা কেন তা পুষে রাখার কথা বলেছেন? কী পুষে রাখার কথা বলা হয়েছে?
☆ উত্তর → মতি নন্দীর ‘কোনি’ উপন্যাসে কোনি বড়োলোকদের মেয়েদের স্কুলে জল চাইতে গিয়ে কিংবা হিয়া মিত্রের কাছে অবজ্ঞা, তাচ্ছিল্য ও অপমান পায়। হিয়ার প্রতি কোনির এই হিংস্র আক্রোশটা আগামীদিনের জন্য পুষে রাখতে চেয়েছিলেন ক্ষিতীশবাবু।
☆ আসলে এই আক্রোশটা হল প্রতিদ্বন্দ্বিতার বাজারে যে কোনো বিষয়ে নিজেকে তুলে ধরা। কারন, হিয়া মিত্রই কোনির ভবিষ্যৎ প্রতিদ্বন্দ্বী, এটা কোনির প্রশিক্ষক ক্ষিতীশ সিংহ বুঝে গিয়েছিলেন। আর এটিকে কোনির মধ্যে প্রজ্জ্বলিত করতে তিনি এটা পুষে রাখতে দেন।
চিড়িয়াখানা দেখতে গিয়ে কোনি স্কুল ইউনিফর্ম পরা ছাত্রছাত্রীদের কাছে জল আনকে গেলে তারা কোনির আপাদমস্তক নিরীক্ষন করে তাকে ফিরিয়ে দেয়। পরেরক্ষনে হিয়া গ্লাসে করে জল দিতে এলে অপমানে, রাগে-ক্ষোভ কোনি হিয়ার হাত থেকে গ্লাসটা ছিটকে ফেলে দেয়।
কিন্তু ক্ষিতিশ কোনিকে একটুও বকেনি। কারন সে ভেবেছিল কোনির এই হিংস্র আক্রেশটাই একসময় প্রজ্জ্বলিত হয়ে তাকে বোমার মতো ফাঠিয়ে তুলবে সাঁতার প্রতিযোগিতায়। এখানে ক্ষিতিশ সত্যিকারের প্রশিক্ষিক অর্থাৎ ❝Friend, philosofer and guider❞ হয়ে কোনির মধ্যে হিংস্র আক্রোশ পুষে রাখতে চেয়েছিলেন।
❝বুকের মধ্যে একটা প্রচন্ড মোড় অনুভব করল, চিকচিক করে উঠল চোখ দুটি❞ –কার, কেন এমন হয়েছিল?
☆ উত্তর → মতি নন্দীর ‘কোনি’ উপন্যাসের ষষ্ঠ পরিচ্ছেদে ক্ষিতীশ সিংহের মন এমন হয়ে উঠেছিল। অর্থাৎ দীর্ঘদিনের সাঁতারু কোচ পদ নিয়ে জুপিটার ক্লাব থেকে দলাদলির স্বীকার হয়ে তাকে ঐ পদ ছাড়তে হয়েছিল।
দীর্ঘ ৩৫ বছরের সম্পর্ক তার জুপিটার ক্লাবের সঙ্গে। সাঁতারের কোচ হিসাবে সাঁতারু তৈরি করা তার জীবনের ব্রত। হরিচরনের মতো কিছু নিচবুদ্ধি ও সুবিধাভোগী মানুষের কুচক্রান্তে তিনি ক্লাবের চিফ ট্রেইনারের পদ ছেড়ে দেন। কিন্তু তিনি থেমে থাকেননি। অবশেষে কোনি নামে মেয়েটির মধ্যে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন দেখেন। শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়ে ঐ ক্লাবের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে। প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যাপোলো ক্লাবের দিকে পা বাড়ান। দীর্ঘদিনের জুপিটার ক্লাবের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেতে গিয়ে মনের মধ্যে স্মৃতি ভেসে ওঠে। এতে তিনি প্রচন্ড কষ্ট অনুভব করেন। এমনকি তাঁর চোখের কোনায় জলও দেখা যায়। এখানে সেই অনুভব-অনুভুতির কথাই বলা হয়েছে।
❝মেডেল তুচ্ছ ব্যাপার, কিন্তু দেশ বা জাতির কাছে এর দাম অনেক❞ –কে, কাকে একথা বলেছিল? তার একথাগুলির তাৎপর্য লেখ।
☆ উত্তর → মতি নন্দীর ‘কোনি’ উপন্যাসে আলোচ্য অংশের বক্তা হলেন সাঁতারু প্রশিক্ষক ক্ষিতীশ সিংহ। তিনি বিষ্ণুচরন ধড়কে উক্ত কথাগুলি শুনিয়েছিলেন।
☆ আলোচ্য উপন্যাসে এক অতি সাধারন বস্তির মেয়ে কোনির জীবন ইতিহাস নিয়ে লেখা এক ট্যালেন্ট ধর্মী উপন্যাস। যে উপন্যাসের বিষয়বস্তু সমাজ, দেশ, রাষ্ট্র বা পৃথিবীর কাছে একজন ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব তুলে ধরার জন্য প্রয়োজন, ট্যালেন্ট ও Altitude যার মধ্যে সেই ব্যক্তি শ্বাশ্বতকাল পৃথিবীতে বেঁচে থাকে। সেইসঙ্গে তার জাতীয়তাবাদও বেঁচে থাকে। তার এই কৃতিত্বের জন্য তাকে দেওয়া হয় মেডেল।
কিন্তু একটা দেশের কাছে, একটা জাতির কাছে, একটা ট্যালেন্ট হিরোর কাছে মেডেল তুচ্ছ ব্যাপার। তার প্রেরণা, তার Attitude, তার ট্যালেন্ট যা দেশ, জাতি এমনকি সারা পৃথিবীকে অনুপ্রেরণা দেয়। তার মধ্যে সে পৃথিবীতে যুগ যুগ বেঁচে থাকে। তাই ক্ষিতীশ সিংহ বলতে চেয়েছেন একজন খেলয়াড়কে সারা পৃথিবীর লোক যাতে এক ডাকে চিনতে পারে এটাই জীবনের স্বার্থকতা।
ক্ষিতীশ সিংহ যেভাবে কোনির কঠোর অনুশীলনের ব্যবস্থা করেছিলেন, তার সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।
☆ উত্তর → মতি নন্দীর ‘কোনি’ উপন্যাসে নিষ্ঠাবান সাঁতারু প্রশিক্ষক ক্ষিতীশ সিংহ কোনির ভিতরে লুকিয়ে থাকা চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লক্ষনগুলিকে চিনতে পেরেছিল। তাই তাকে চ্যাম্পিয়ন বানানোর লক্ষ্যে তিনি তার জন্য কঠোর অনুশীলনের ব্যবস্থা করেছিলেন।
প্রশিক্ষন শুরু হওয়ার দু’সপ্তাহের মধ্যেই ক্ষিতিশ কোনিকে সাঁতারের বিভিন্ন কৌশল শিখিয়ে দিয়েছিলেন। আর কোনি রোজ সকাল সাড়ে ছটা থেকে সাড়ে আটটা পর্যন্ত দুইঘন্টা ধরে প্র্যাকটিশ চালিয়ে সেসব কৌশল আয়ত্ত করে। অত্যন্ত দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করায় কোনির শরীরে অপুষ্টির ছাপ দেখে ক্ষিতীশ তাকে রোজ দুটো ডিম, দুটো কলা ও দুটো মাখন টোস্টের বিনিময়ে আরও একঘন্টা প্র্যাকটিশে রাজি করিয়ে নেয়।
আবার কোনির স্বাস্থ্যের কথা ভেবে ক্ষিতিশ তার বাড়িতেই কোনির খাওয়ার ব্যবস্থা করে। কোনির দৃঢ় মানসিকতাকে জাগিয়ে রাখতে মহারাষ্ট্রের রমা যোশী ৭২ সেকেন্ডে ১০০ মিটার ফ্রিস্টাইল করলেও কোনির সামনে তুলে ধরেন ৭০ সেকেন্ড।
এভাবে ক্ষিতীশের প্রচেষ্টায় কোনি এক নির্ভিক নিরপেক্ষ সাঁতারু হয়ে ওঠে।
❝এইভাবে মেডেল জেতায় কোনো আনন্দ নেই❞ –বক্তা কে? তার এমন কথা বলার কারণ কী?
অথবা, ❝তোমার লাস্ট ফরটি মিটারস ভুলব না❞ –কার উক্তি? উদ্ধৃত অংশের তাৎপর্য বুঝিয়ে দাও।
☆ উত্তর → মতি নন্দীর ‘কোনি’ উপন্যাসে উদ্ধৃত আংশটির বক্তা হলেন কোনির অন্যতম প্রতিদ্বন্ধী হিয়া মিত্রের বাবা। তিনি কোনির বিরুদ্ধে হওয়া চক্রান্ত মেনে নিতে পারেনি বলে এই মন্ত্যব্য করেছিলেন।
☆ জুপিটার ক্লাবের একসময়ের চিফ ট্রেইনার ক্ষিতীশবাবু ও তারই হাতে তৈরি করা এক অতিসাধারন পরিবারের সাঁতারু কোনি জুপিটার ক্লাবের এক গোষ্ঠী চক্রান্তের শিকার হয়। এই চক্রান্তের শিকারে পর স্টেট চ্যাম্পিয়নশিপে দুই-দুইবার ডিসকোয়ালিফাই হয়। একবার তো প্রথম হয়েও দ্বিতীয় স্থান গ্রহন করতে হয় কোনিকে। ব্রেস্ট স্টোকের একশো মিটারের কোনির প্রতিদ্বন্দ্বি ছিল হিয়া মিত্র। সেখানে টাইম কিপার বদু
চাটুজ্জে কোনিকে মিথ্যা অজুহাতে ফ্লাগ নেড়ে ডিসকোয়ালিফাই করেন। এছাড়া ফ্রি স্টাইলে কোনি সাঁতার শেষ করে ফিনিশিং বোর্ড ছুঁয়ে মুখ ঘুরিয়ে দেখে অমিয়া এসে ফিনিশিং বোর্ড ছুঁল, অথচ, ঘোষনার সময় দেখা গেল অমিয়া প্রথম। এক্ষেত্রে ক্ষিতিশ প্রতিবাদ করলেও তা গ্রাহ্য হয়নি।
এমনকি, বাটারফ্লাই ইভেন্টে কোনিকে আগে থেকেই ফ্লাগ তুলে ডিসকোয়ালিফাই করা হয়। এই দৃশ্যগুলি হিয়ার বাবা লক্ষ্য করেন। তাই তার মেয়ে হিয়া মিত্র মেডেল পেলেও, এই জয় তিনি মেনে নিতে পারেননি বলে তিনি এই মন্তব্য করেছেন।
❝হঠাৎ তার চোখে ভেসে এল সত্তর সাংখ্যাটা❞ – সত্তর সংখ্যাটির সঙ্গে প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তাৎপর্য বুঝিয়ে দাও।
☆ উত্তর → মতি নন্দীর ‘কোনি’ উপন্যাসে কোনি মাদ্রাজে ন্যাশানাল চ্যাম্পিয়নশিপে যাওয়ার আগে পর্যন্ত মহারাষ্ট্রের ‘১’ নং স্বর্ণজয়ী সাঁতারুর নাম রমা যোশী।
রমা যোশী নাকি একের পর এক সোনাজয়ী সাঁতারু। প্রথমটায় সাধারন চেহারার রমা যোশীকে চিনতে সুবিধা হলেও নাম শুনে সে বুঝে যায়। এই প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বীকে হারানোর জন্যই কোনিকে অক্লান্ত পরিশ্রম করতে হয়েছে। ট্রেনিংয়ের সময় ক্ষিতীশ সর্বদা কোনির চোখের সামনে বড়ো করে লাল কালিতে সত্তর সংখ্যা লিখে ঝুলিয়েছিল। তাই যোশীকে দেখে তার চোখে ভেসে উঠল সেই সত্তর সংখ্যাটি।
সত্তর সংখাটি আসলে কোনির টার্গেট সাংখ্যা। যা রমা যোশীর সময়ের থেকে দু’সেকেন্ড কম। এটাই ছিল কোনির লক্ষ্য। কোনি যাতে সেইবছরই রমা যোশীর সময় অতিক্রম করতে পারে তাই ক্ষিতীশ সর্বদা তার চোখের সামনে ‘৭০’ সংখ্যাটি তুলে ধরতেন। শয়নে, স্বপনে, চিন্তনে, মননে কখনোই যাতে কোনি একথাটা না ভুলে তাই তিনি এইবন্দোবস্ত করেছিলেন।
তাই মাদ্রাজে যোশীকে দেখেই কোনি মনে পড়ে গিয়েছিল সেই সত্তর সাংখ্যাটা।
❝রমা যোশীর সোনা কুড়োনো বন্ধ করা ছাড়া আমার কোনো স্বার্থনেই❞ –উদ্ধৃত অংশের আলোকে বক্তার চরিত্রটি লেখ।
☆ উত্তর → মতি নন্দীর ‘কোনি’ উপন্যাসে উদ্ধৃত অংশটির বক্তা হলেন বালিগঞ্জ সুইমিং ক্লাবের চিফ ট্রেইনার ও হিয়া মিত্রের কোচ প্রণবেন্দু বিশ্বাস।
তিনি একজন পেশাদারি জাতীয় সাঁতারু ট্রেইনার। উদ্ধৃত অংশটির আলোকে বক্তার যে দিকগুলি ফুটে উঠেছে তা হল—
১) জাতিয়তাবোধ :– প্রণবেন্দু বাবু ক্রিয়াজগতের এক জাতীয়তাবাদী মনোভাবাপন্ন ট্রেইনার। তাই হিয়া মিত্রের কোচ হওয়া সত্ত্বেও, বাংলার ভাবমূর্তিকে উজ্জ্বল করতে তিনি কোনিকে দলে অন্তভুক্তির কথা বলেছিলেন। শুধু তাই নয়, একথা যদি বাস্তবায়িত না হয় তাহলে প্রতিযোগিতা থেকে নাম তুলে নেবেন বলে হুমকি দেন।
২) সততা :– প্রশিক্ষক প্রণবেন্দুবাবু ছিলেন স্বচ্ছ ভাবমূর্তির মানুষ। তাই তিনি অন্যায়ের কাছে নিজের সততাকে বিসর্জন দেননি বলে স্টেট চ্যাম্পিয়নশিপে কোনিকে ডিসকোয়ালিফাই করলে তিনি তার প্রতিবাদ জানান।
৩) পেশাদারিত্ব :– প্রশিক্ষক প্রণবেন্দুবাবু বুঝেছিলেন ক্ষিতীশ হিয়ার টাইম নেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে। তাই তিনি হিয়াকে এমনভাবে প্র্যাকটিশ করার নির্দেশ দেন যাতে ক্ষিতীশ হিয়ার সময় বুঝতে না পারে।
অতএব, কোনির প্রতিভাকে জাতির স্বার্থে তুলে ধরার জন্য যেকজন সদর্থক ব্যক্তি ছিলেন তাদের মধ্যে প্রণবেন্দু বাবুর নাম করতেই হয়।
❝কোনি❞ উপন্যাস অবলম্বনে কোনি চরিত্রটি বিশ্লেষন কর।
☆ উত্তর → সাহিত্য ও ক্রীড়া জগতের খ্যাতনামা ব্যক্তিত্ব মতি নন্দীর ‘কোনি’ উপন্যাসের মুখ্য চরিত্র কোনি। উপন্যাসের নামানুসারে কোনি চরিত্রের প্রাধান্য ফুটে উঠেছে তা বলায় বাহুল্য।
শ্যামপুকুরের বস্তি পরিবারের ডানপিটে স্বভাবের মেয়েটির সাফল্যের চুড়ান্ত শিখায় পৌঁছনোর কাহিনীর মধ্য দিয়ে কোনি চরিত্রটি পাঠকের হৃদয় জয় করে নিয়েছে। অতএব, আলেচ্য উপন্যাসে কোনির যে সমস্ত চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য ফুটে উঠেছে তা হল,—
১) লড়াকু মনোভাব :– গল্পের শুরুতেই গঙ্গায় আম কুড়োনো থেকে শুরু করে ন্যাশানাল চ্যাম্পিয়নশিপের সুইমিংপুলে সর্বত্রই তার লড়াকু মনের পরিচয় পাওয়া যায়। এছাড়াও তাকে জীবনের প্রতিমুহূর্তে প্রতিকূল পরিস্থিতির সঙ্গে লড়াই করতে হয়েছে।
২) কষ্ট সহিষ্ণুতা :– দারিদ্রতা, খিদে, কায়িক পরিশ্রম কোনিকে দাঁতে দাঁত চেপে সহ্য করতে হয়েছে। তার শিক্ষা গুরু ক্ষিতীশবাবু তাকে সেই শিক্ষাই দেন। আর এই কষ্ট সহিষ্ণুতায় তাকে শেষ পর্যন্ত সাফল্য এনে দেয়।
৩) সুদৃঢ় মনোভাব :– জীবনে বারবার প্রতিকূলতার মুখোমুখি হলেও কোনি কখনো ভেঙে পড়েনি। সমস্ত অপমান ও চক্রান্তকে মোকাবিলা করে দৃঢ় মানসিকতার পরিচয় দিয়ে চূড়ান্ত সাফল্যের জায়গায় পৌঁছে গিয়েছে।
৪) সহনশীলতা :– কোনির চরিত্রের মধ্যে আমরা খুঁজে পাই তার অসীম সহ্য শক্তির ক্ষমতা। প্রতিকুল পরিস্থিতি, দ্রারিদ্রের চাপ, কখনও ক্ষিতদার তিরস্কার আর অন্যান্য সাঁতরুদের কাছে অপমান সমস্ত কিছুকে কোনি মুখ বুঝে সহ্য করেছে। আর শেষ পর্যন্ত সমস্ত অপমান কড়াই-গন্ডায় উসুল করে নিয়েছে।
৫) খেলয়াড় সুলভ মনোভাব :– হিয়া মিত্র কোনিকে আনস্পোর্টি বললেও সমস্ত উপন্যাস জুড়ে আমরা কোনির খেলয়ারসুলভ মনোভাবের পরিচয় পায়। সর্বশেষে এই হিয়ার আনস্পোর্টিং এর জবাব দিয়ে খেলয়ার সুলভ মনোভাবের পরিচয় দিয়েছে।
সুতরাং, সবমিলিয়ে একজন মানুষকে বড়ো হতে গেলে জীবনে প্রতি মুহুর্তে যে সংগ্রাম করতে হয় তা কোনি চরিত্রের মধ্যে স্পষ্ট ফুটে উঠেছে। আর এই চরিত্রটি আমাদের কাছে সর্বদা মাইলস্টোন হয়ে থাকবে।
❝সবপারে, মানুষ সব পারে, ফাইট কোনি ফাইট❞ –উদ্ধৃতির আলোকে বক্তার চরিত্র আলোচনা করো?
☆ উত্তর → সাহিত্য ও ক্রিড়া জগতের অন্যতম শ্রেষ্ঠ লেখক মতি নন্দীর ‘কোনি’ উপন্যাসে। ক্ষিদ্দা অর্থাৎ ক্ষিতীশ সিংহ আগাগোড়া এক ব্যতিক্রমী মানুষ। এই উপন্যাসে একজন উপযুক্ত শিক্ষক হিসাবে শিক্ষাসুলভ আদর্শের মানসিকতা ফুটে উঠে।
১) অভিজ্ঞ প্রশিক্ষক :– ক্ষিতীশের মতে, চ্যাম্পিয়ান তৈরি করা যায় না, তাকে শুধু চিনে নিতে হয়। গঙ্গার ঘাটে কোনির লড়াকু সত্তাকে অভিজ্ঞ প্রশিক্ষকের চিনে নিতে ভুল হয়নি।
২) আপসহীন সাংগ্রামী :– জীবন মানেই সাংগ্রাম, তাই প্রতিকুলতার কাছে কখনো মাথা নত করেনি এই মানুষটি। তাঁর বিরুদ্ধে যতই চক্রান্ত করা হোক, তিনি লক্ষ্যে স্থির থেকে সমস্ত প্রতিকুলতাকে দূরে সরিয়ে জীবনযুদ্ধে জয় ছিনিয়ে নিয়েছেন।
৩) প্রশিক্ষক মনস্তাত্বিক সম্পন্ন :– শিষ্যকে বড়ো করে তুলতে হলে প্রশিক্ষকের যে মানসিকতার প্রয়োজন, তার সবকটি গুনই ছিল ক্ষিতীশবাবুর মধ্যে। কথা-কাজ ও উদাহরণ দিয়ে শিষ্যের উচ্চ আকাঙ্ক্ষাকে জাগিয়ে তুলতে হয় অর্থাৎ চ্যম্পিয়ন হতে হলে গুরুকেও দৃঢ় প্রশিক্ষক মানসিকতার প্রয়োজন, তা ক্ষিতীশের মধ্যে ছিল।
৪) অধ্যবসায় :– কোনিকে চ্যাম্পিয়ন বানানোর জন্য ক্ষিতীশ কঠোর ভাবে তার অনুশীলন, শরীরচর্চা, খাওয়াদাওয়া এমনকি জীবনযাত্রার ধরনকেও নিয়ন্ত্রন করেছেন।
৫) গুরুর দায়িত্ব :– শিষ্যের শ্রদ্ধা শুধু গুরুর কাম্য নয়, তিনি কোনিকে শেখান– যন্ত্রনা আর সময়কে জয় করতে পারলে মানুষ সবপারে। তাই তিনি একজন গুরু হয়ে শিষ্য কোনিকে উদ্বুদ্ধ করেছেন ‘ফাইট কোনি ফাইট’ বলে।
অর্থাৎ, কোনির যন্ত্রনা ও ক্ষিতীশের যন্ত্রনা একাত্ব হয়ে ফুটে উঠেছে আমাদের সামনে। তাই ন্যাশানাল চ্যাম্পিয়নশিপে জেতার পর, কোনিকে যন্ত্রনার কথা বলতে শুনে ক্ষিদ্দা তাকে বলেছিলেন ❝ওটেই তো আমিরে, ঐ যন্ত্রনাটাই তো আমি❞। এইভাবে এক আদর্শ প্রশিক্ষক হিসাবে আমরা তাকে পেয়েছি কোনি উপন্যাসের মধ্যে।
আরো অন্যান্য বিষয়ের নোটস, সাজেশন এবং মাধ্যমিক 2025 এর প্রস্তুতির জন্য অবশ্যই আমাদের “টার্গেট25” গ্রুপ জয়েন করতে পারো: Join Now ↗
মাধ্যমিক পরীক্ষার আগে ছাত্র-ছাত্রীদেরকে বিশেষভাবে সাজেশন আমরা দেব যেখানে মাত্র কয়েকটি প্রশ্ন করলেই কমন পেয়ে যাওয়ার সুযোগ থাকবে অবশ্যই আমাদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যেও যারা মাধ্যমিক পরীক্ষা ২০২৫ দেবে।
আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ ও টেলিগ্রাম Study গ্রুপে যুক্ত হোন -