উচ্চমাধ্যমিকের নতুন সেমিস্টার সিস্টেমে দ্বিতীয় সেমিস্টারের একাদশ শ্রেণীতে কবি বিদ্যাপতির ভাব সম্মেলন কবিতাটি রয়েছে। এই কবিতাটি সহজে অর্থ, পটভূমিকা এবং লাইন ধরে আলোচনা তোমাদের জন্য আজকে করা হলো।
কবি বিদ্যাপতির “ভাব সম্মিলন” কবিতার বিষয়বস্তু ও সহজ বাংলা অর্থ
বিষয়বস্তু
কংসকে হত্যা করার পর শ্রীকৃষ্ণ মথুরার রাজা হলেন। তিনি মথুরাকে একটি শান্তিপূর্ণ রাজ্যে পরিণত করলেন। কিন্তু কংসের অন্যান্য অত্যাচারী আত্মীয়রা বিশেষ করে কংসে শ্বশুরমশাই মগধের রাজা জড়াসন্ধ মথুরার মানুষদের উপর অত্যাচার চালাতে থাকল। এই অত্যাচার থেকে মুক্তি পেতে এবং ভগবান বিষ্ণুর অবতার হিসেবে নিজের দায়িত্ব পালন করার জন্য শ্রীকৃষ্ণ মথুরা ছেড়ে এবং বৃন্দাবনে তার প্রেমিকা রাধারানীকে রেখে চলে যান। তারপর সমুদ্রের উপর নতুন একটি শহর দ্বারকা স্থাপন করলেন।
কৃষ্ণ মথুরা ও বৃন্দাবন থেকে চলে যাওয়ার পর একদিন হঠাৎ রাধারানীর কল্পনাতে তার প্রেমিক শ্রীকৃষ্ণের আবির্ভাব হয় আর তারপর রাধা তাঁর সখিকে তাঁর অসীম আনন্দের কথা বলছেন। তিনি বলছেন, “হে সখি, কী বলব তোকে আমার এই আনন্দের কথা? আমার প্রিয়তম শ্রীকৃষ্ণ চিরদিনের জন্য আমার হৃদয়ে বাস করে।“
রাধা আরও বলেন, “চাঁদের আলো যতটা আমাকে কষ্ট দেয়, শ্রীকৃষ্ণের মুখ দেখলে ততটাই আমি সুখ পাই। যদি আমার কোঠা ভরে রত্ন পাওয়া যায়, তবুও আমি আমার প্রিয়তমকে দূরে পাঠাব না।“
শ্রীমতি রাধারানী তার জীবনে প্রিয় মাধবের প্রয়োজনীয়তা বিষয়ে বলেছেন যে, শীতকালে যেমন শীত থেকে বাঁচার জন্য চাদরের প্রয়োজন, গ্রীষ্মকালের তীব্র গরমে যেমন ঠান্ডা বাতাসের প্রয়োজন, বর্ষাকালে বৃষ্টি থেকে বাঁচার জন্য যেমন ছাতার প্রয়োজন এবং জলপথে গমনের জন্য যেমন নৌকার প্রয়োজন ঠিক তেমনি রাধারানীর জীবনে তার প্রিয়তম শ্রী মাধবের প্রয়োজন রয়েছে।
শেষে বিদ্যাপতি নিজেই বলে উঠেন, “হে শ্রীমতি রাধিকা, তুমি শোন, সুজনদের দুঃখ কয়েকদিনের জন্যই হয়।“
সহজ বাংলা অর্থ লাইন ধরে আলোচনা (Class 11 2nd Semester Vab Sammilan Vidyapati)
❝ কি কহব রে সখি আনন্দ ওর।
চিরদিনে মাধব মন্দিরে মোর।। ❞
শ্রীমতি রাধারানী তার সখীদের বলছেন, “হে সখি আমার এই সীমাহীন আনন্দের কথা, আর কি বলব? আমার প্রিয়তম শ্রীকৃষ্ণ আমার হৃদয় মন্দিরে চিরকাল উপস্থিত থাকবেন।”
❝ পাপ সুধাকর যত দুখ দেল।
পিয়া-মুখ-দরশনে তত সুখ ভেল।। ❞
“পাপী চন্দ্রালোক আমাকে যত কষ্ট দিয়েছে, আমি তার থেকেও বেশি সুখ পেয়েছি প্রিয় মাধবের মুখ দর্শনে।”
❝ আঁচর ভরিয়া যদি মহানিধি পাই।
তব হাম পিয়া দূর দেশে না পাঠাই।। ❞
“যদি কেউ আমাকে আঁচল ভরে মহামূল্যবান রত্নও দিয়ে তার বিনিময়ে আমি আমার মাধবকে আমার থেকে দূরে রাখতে বা দূরদেশে পাঠাতে পারবো না।”
❝ শীতের ওঢ়নী পিয়া গীরিষির বা।
বরিষার ছত্র পিয়া দরিয়ার না।। ❞
শীতের সময় যেমন ওঢ়নীর বা চাদরের প্রয়োজন, গ্রীষ্মকালে ঠান্ডা বাতাসের প্রয়োজন, বর্ষাকালে ছাতার প্রয়োজন এবং নদী বা সমুদ্র পারি দিতে গেলে যেমন নৌকার প্রয়োজন তেমনি আমার জীবনে আমার প্রিয়তম শ্রীকৃষ্ণ বা মাধবের প্রয়োজন।
❝ ভণয়ে বিদ্যাপতি শুন বরনারি।
সুজনক দুখ দিবস দুই-চারি।। ❞
কবি বিদ্যাপতি শ্রী রাধিকাকে বরনারী বলে ইঙ্গিত করে বলেছেন যে, ভালো মানুষ বা সুজনের দুঃখ স্বল্প বা ক্ষনস্থায়ী অর্থাৎ ২-৪ দিনের জন্য স্থায়ী হয়।
একাদশ শ্রেণি দ্বিতীয় সেমিস্টার প্রস্তুতি whatsapp গ্রুপ (টার্গেট একাদশ) | Join Group |
পরবর্তী ক্লাসে আমরা কবিতাটির প্রশ্ন উত্তর নিয়ে আলোচনা করব এবং সেমিস্টার প্যাটারনে যেভাবে তোমাদের উত্তর লিখতে হবে তার সম্পূর্ণ গাইড থাকবে। তোমরা অবশ্যই নিজের বন্ধুদের মধ্যে শেয়ার করে দিও।
আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ ও টেলিগ্রাম Study গ্রুপে যুক্ত হোন -